Wednesday, July 18, 2012

ছোট ধামাই’র মনিপুরী সমাজ



শাহীন আহমেদ
মটরসাইলে এগিয়ে চলেছে। জুরি থেকে আমাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয় শিল্পী ভাগ্য সিংহ। ওপরে নীল আকাশ। নিচে সবুজে ঘেরা চা বাগান। পাহাড়ি শীত গায়ে মেখে আমরা যাচ্ছি ছোট ধামাই’র মনিপুরী পল্লীতে। মৌলভীবাজার জেলার জুরি এর অবস্থান। মনিপুরীরা এখানে বসতি গেড়েছেন প্রায় দুশ’ বছর আগে। ভাগ্য সিংহ আমাদের নিয়ে গেলেন মনিপুরী সমাজ প্রধান খুল আহালের বাড়ি। এগিয়ে এলেন রনজিতা শর্ম্মা। বসলাম অতিথি শালায়। মিনিট পাঁচেকের মধ্যে তিনি নিয়ে এলেন ঐতিহ্যবাহী মনিপুরী মোয়া, আপেল আর খেজুর। তারপর এলো পেয়ালা ভর্তি চা। জলযোগ শেষ হলো। আমাদের আসরে যোগ দিলেন চন্দ্রধন সিংহ। তিনি মনিপুরী শিল্পকলা একাডেমির সহ-সভাপতি। এরপর জমে উঠল গল্পের আসর।
মনিপুরীরা মঙ্গোলিয়ান গোষ্ঠির তিব্বত-ব্রহ্ম শাখাভুক্ত। অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথমভাগে মনিপুরীরা বৈষ্ণব ধর্মে দীক্ষিত হয়। তখন মনিপুরের রাজা ছিলেন মহারাজ চিতোম খোস্বা। মনিপুরীরা বিষ্ণুপ্রিয়া, মৈতেই ও মৈতেই পাঙ্গার- এই তিন শ্রেণীতে বিভক্ত। বিষ্ণুপ্রিয়া ও মৈতেই সম্প্রদায়ের লোকেরা হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসী। তারা গোড়ীয় বৈষ্ণব সম্প্রদায়ভুক্ত। মৈতেই পাঙ্গালরা ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী। অষ্টাদশ শতকে মনিপুরী রাজপরিবারে আত্মকলহ দেখা দেয়। এই সুযোগে পার্শ্ববর্তী রাজ্যের রাজা ব্রহ্মরাজ মনিপুর আক্রমণ করেন। মনিপুরীদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে মৈতেই এবং বিষ্ণুপ্রিয়াদের মধ্যে মতভেদ আছে। দীর্ঘদিন বড়লেখায় বসবাস করলেও মনিপুরীদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এখনও অক্ষুণœ আছে। এই পাড়ায় আছে তাদের ম-প ও দেবমন্দির। মনিপুরীদের পাড়াভিত্তিক সংগঠন নাম ‘সিংলুপ’। পাড়ার সকল পরিবার এর সদস্য। সিংলুপ প্রধানের নাম ‘খুলআহাল’। মাতৈ ভাষায় সিংলুপের উচ্চতর পর্যায় হচ্ছে লৈপাক পানচায়’। এর প্রধান হচ্ছেন ‘পানচায় মাকফ’। তাকে সাহায্য করেন ‘ইশে ইশেলপা’ (গায়ক) ‘পুংজৈরা’ অথবা ডাকুলা (মৃদঙ্গবাদক) ‘শাস্বাসা’ (অভ্যর্থনাকারী), আরাঙ পুরেন’ বা ‘আরাংপা (ভা-ারী), মইবুং অংবা (শঙ্খবাদক)। ‘পুরেন’ হচ্ছেন প্রধান ব্রাহ্মণ। তিনি ধর্মীয় বিধি ব্যবস্থার নির্দেশ দেন। তার সহকারী হলেন ‘পুরেন মথাং’। মনিপুরী ছেলেরা পারিবারিক পরিবেশে ধুতি ও গামছা পরে থাকে, তবে বর্তমানে প্রজন্মের ছেলেরা প্যান্ট শার্টই বেশি পরে। মনিপুরী মেয়েরা নিজেদের বোনা এক ধরনের কাপড় পরে থাকে, যাকে মনিপুরী ভাষায় ‘ফানেক’ বলে। এছাড়া মেয়েরা ওড়না জাতীয় ইন্নাফিও ব্যবহার করে। মেয়েদের কেউ কেউ আজকাল শাড়িও ব্যবহার করে। তবে ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানাদিতে ছেলেরা অবশ্যই ধুতি এবং মেয়েরা ‘ফানেক’ ব্যবহার করে। মনিপুরীরা মূলত নিরামিষভোজী। তবে মাছ খেয়ে থাকে। কোনো ধরনের মাংস, ডিম, পেঁয়াজ, রসুন, ইত্যাদি মনিপুরীদের জন্য নিষিদ্ধ। অন্যান্য ব্যাপারে খাদ্যভাসে বাঙালি জনগণের অনুরূপ। তারা ‘মায়াংবা’ নামক এক প্রকার ছোট গাছের সুগন্ধী পাতা ও ‘তক পানিংকক’ নামক লতার পাতা মসলা হিসেবে খেয়ে থাকে। রসুন পাতার গন্ধযুক্ত ‘জনাম’ পাতার চাষ দেখা যায় প্রত্যেক মনিপুরী বাড়িতে। বিভিন্ন কাঁচা পাতা দিয়ে তৈরি ‘সেঞ্জু’ নামক সালাদ জাতীয় খাদ্য তাদের খুব প্রিয়।
সঙ্গীতের ক্ষেত্রে মনিপুরীদের রয়েছে উজ্জ্বল উত্তরাধিকার। তাদের ধর্মীয় অনুভূতি এই ঐতিহ্যকে দৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করেছে। বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সর্বপ্রথম মনিপুরী নৃত্যকে বিশ্বের দরবারে পরিচিত করেন। ১৯১৯ সালে সিলেটে মনিপুরী বালক-বালিকাদের নৃত্য দেখে তিনি শান্তি নিকেতনে এই নৃত্য শিক্ষার প্রবর্তন করেন। মনিপুরী নৃত্যের মধ্যে রাস নৃত্য সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য। ‘খুলংইশৈ’, ‘লাই হারাইবাজাগই’ ও ‘খাস্বা হাইবা’ নামক প্রাচীন লোকনৃত্যের পটভূমিকায় এটি উপস্থাপিত বলে অনেকে মনে করেন। সুদূর অতীতে পরম বৈষ্ণব মনিপুর ভাগ্যচন্দ্র সিংহ স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে রাধা কৃষ্ণের লীলার অনুকরণে যে রাম নৃত্যের প্রচলন করেন তা আজও অপরিবর্তিত আছে। সোনা-রূপার বিবিধ কারুকার্যখ-িত এসব নৃত্যের পোশাক-পরিচ্ছদের মধ্যে রয়েছে রেশমের ‘ফুরিৎ’ (ব্লাউজ), ‘পৎলয়’ (ঘাগরা) ও মাইয়ুম (মন্তকাভরণ) ইত্যাদি। সুসজ্জিত কীর্তিনিয়াদের নৃত্য সহকারে দীর্ঘলয়যুক্ত নাম সংকীর্তন তাদের অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান। আরও যেসব নৃত্য মনিপুরী সমাজে প্রচলিত আছে তা হলো লাই হারাওবা জাগোই। এই নৃত্যে প্রকৃতি পূজার পরিচয় মেলে। লাই শব্দের অর্থ দেবতা, হারাওবা অর্থ আনন্দ এবং জাগোই অর্থ নৃত্য। এর ইতিহাস এরকম সৃষ্টিকর্তা যখন জড় ও জীব পৃথিবী সৃষ্টি করলেন এবং পরবর্তীকালে স্রষ্টার মূর্তির অনুকরণে মনুষ্য সৃষ্টিতে সফলতা পেলেন তখন দেবদেবীগণ আনন্দে যে নৃত্য প্রকাশ করেছিলেন তারই নাম দেয়া হয়েছে হারাওবা নৃত্য। তাই লাই হারাওবা নৃত্যে দেখা যায় পৃথিবীর সৃষ্টিতত্ত্ব থেকে শুরু করে গৃহায়ন, শস্যবপন, জন্মমৃত্যু সবকিছুই নৃত্য ও সঙ্গীতের সুর লহরীতে ঝংকৃত হয়। এ নৃত্যের আঙ্গিক অংশগুলো যেমন লৈশেস জাগোই (সৃষ্টিনৃত্য), লৈতা জাগোই (গৃহায়ন নৃত্য) লৈসা জাগোই (কুমারী নৃত্য) প্রভৃতি মনিপুরী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে লোক সংস্কৃতি হিসেবে প্রদর্শিত হয়।
খাম্ব^া থোইবি জাগোই নৃত্যকে মনিপুরী লোক সংস্কৃতির এক অমূল্য সম্পদ হিসেবে মনে করা হয়। এ নৃত্যে সর্বজনীন প্রেমের রূপ পরিলক্ষিত হয়। থোইবি একজন রাজকন্যা। আর খাম্ব^া দরিদ্র, খেটে খাওয়া এক সাহসী যুবক। যুবক খাম্বাকে পছন্দ করে রাজকন্যা থোইবি। আবার রাজকন্যাকে পছন্দ করে যুবরাজ নোংবান। যুবরাজ নোংবান রাজকন্যার প্রেমে ব্যর্থ হন। এভাবেই এগিয়ে যায় কাহিনী। বর্তমানে এই লোককাহিনী মনিপুরী সাহিত্যের এক অমূল্য সম্পদ। থাবল চোংবী হলো দলীয় নৃত্য। এই নৃত্যে একজন গায়ক ও একজন ঢোল বাদককে অবশ্যই থাকতে হয়। এ নৃত্যের গানে থাকে জ্যোৎ¯œার আলোর জন্য সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন, দেশকে সুজলা-সুফলা শস্য-শ্যামলা করে সুখ শান্তিতে ভরে দেবার অপার মিনতি। কেননা, থাবল চোংবী মানেই জ্যোৎ¯œারাতের নৃত্য। অবশ্য এই নৃত্যটির শেষাংশে বিশেষ এক মুহূর্ত থাকে যাকে মনিপুরী ভাষায় বলা হয় ‘লাইরে মা থেক’ বা ড্রাগন আকৃতি। এই নৃত্য পরিবেশিত হয় দোল পূর্ণিমার রাতে কিংবা পরবর্তী কয়েকদিন ধরে। এর জন্য খোলা মাঠ ও প্রচুর জনসমাগমের প্রয়োজন পড়ে। আধুনিক নৃত্যকলার ইতিহাসে মনিপুরী রাস নৃত্যকে একটি উপাখ্যান বললে অত্যুক্তি করা হবে না। যদিও লোকনৃত্যের পরে এ জাতীয় ধ্রুপদী নৃত্যের উত্থান ও বিকাশ। তবুও মনিপুরীদের দ্বারা পরিবেশিত কোনো রাসনৃত্য প্রত্যক্ষ করলে মনে হবে নৃত্য পরিবেশনে শিল্পীর দেহ, মন, প্রাণ যেন যুগ যুগ ধরে নিবেদিত। এ নৃত্যকলাটি বিনম্রতা, প্রেম ও ভক্তি প্রদর্শনের জন্য হয়ে উঠেছে অনন্য। এই নৃত্য নিয়ে লোককাহিনী এরকম- হঠাৎ একদিন ব্রহ্মরাজ মনিপুর আক্রমণ করলে রাজা ভাগ্যচন্দ্র পরাজিত হয়ে আসামে আশ্রয়প্রার্থী হন। আশ্রয়ের ব্যাপারে আসামের রাজা একটি শর্ত জুড়ে দেন যে, যদি তিনি মওহাতি জয়শাকে বশে আনতে পারেন, তবে তাকে আশ্রয় দেয়া হবে। ভাগ্যচন্দ্র ছিলেন আধ্যাত্মিক পুরুষ। তিনি খুব সহজেই ভয়ঙ্কর হাতী জয়শাকে বশীভূত করেন। এই কারণে ভাগ্যচন্দ্রকে জয়সিংহও বলা হয়। মনিপুর পুনরুদ্ধার হলে রাজা মনিপুরে গোবিন্দজিউর বিগ্রহমন্দির প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেখানে পূর্ণাঙ্গ রামনৃত্য পরিবেশন করেন। রামনৃত্যের পোশাক-পরিকল্পনা করেছিলেন স্বয়ং রাজা। এই পোশাকে ফুটে ওঠে মার্জিত রুচি, নম্রতা ও কমনীয়তা। রামনৃত্যে শিল্পীর পরিহিত পোশাকের নাম ‘পলয়’। পলয়ের রয়েছে বিভিন্ন অংশ। মাথার ওপরে থাকে ‘কোকুতস্বী’। মুখের ওপর পাতলা স্বচ্ছ আবরণে থাকে ‘মাইমুখ’, গায়ে ঘন সবুজ ভেলভেটের ব্লাউজ। তাতে সোনালি ও রুপালি চুমকির কাজ। পরনে ঘন সবুজ রঙের পেটিকোট যা শক্ত বক্রম দ্বারা গোলাকৃতি ও ভাজমুক্তভাবে তৈরি করা হয়। এতে বসানো অজস্র চুমকি ও আয়নার কাজ আলোতে ঝলমল করে ওঠে। এই পোশাকের নাম ‘কুমিন’। এছাড়া জরির কারুকাজ করা পেশোয়ান খাওন, খাংনপ ইত্যাদি পলয়ের অংশ। অবশ্য কলথা খাংচিক, খুঁজি ইত্যাদি স্বর্ণালংকারও শিল্পী পলয়ের সঙ্গে পরিধান করে থাকে। বাংলাদেশে রামনৃত্যের সূচনা হয় সম্ভবত ১৮৬৮ খ্রীস্টাব্দের কাছাকাছি কোনো এক সময়কালে। রামনৃত্য বেশ ব্যয়বহুল। পূর্ণাঙ্গ রাসনৃত্যানুষ্ঠান করার জন্য দরকার পড়ে এক থেকে দেড় ডজন পলয়। টাকার অংকে হিসেব করলে দাঁড়ায় প্রায় দু’লাখ টাকা। মনিপুরী সংস্কৃতির আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো থাঙ-তা জাগোই বা তলোয়ার-বর্শা নৃত্য। মনিপুরী থাঙ-তা জাগোই অনেকটা কোরীয় মার্শাল আর্ট ফর্মের মতো। এর তাল ও লয় গাণিতিক ছন্দে বাঁধা। এই কলা রপ্ত করার জন্য ধৈর্য্যশক্তি ও সুঠাম দেহের প্রয়োজন। হালে বাংলাদেশে মনিপুরী থাঙ-তা আট ফর্মের জনপ্রিয়তা লক্ষণীয় মাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে।
মনিপুরী হস্তশিল্প অনেকটা উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত। তাঁত শিল্পের সঙ্গে মনিপুরীদের রয়েছে যুগযুগান্তরের সম্পর্ক। মেয়েদের তাঁত শিল্পের অভিজ্ঞতাকে বিয়ের ক্ষেত্রে পূর্বযোগ্যতা হিসেবে দেখা হয়। ছোট ধামাই’র প্রায় ১২০টি মনিপুরী পরিবার এই তাঁত শিল্পের সঙ্গে জড়িত। মনিপুরীদের বস্ত্র তৈরির তাঁতকল বা মেশিন প্রধানত তিন প্রকার যেমন, কোমরে বাঁধা তাঁত, হ্যান্ডলুম তাঁত ও থোয়াং। এই তাঁতে সাধারণত টেবিল ক্লথ, স্কার্ফ, লেডিস চাদর, তোয়ালে, মাফলার, গামছা, মশারী, ইত্যাদি ছোট কাপড় তৈরি হয়। প্রধানত নিজেদের তৈরি পোশাক দ্বারা নিজেদের প্রয়োজন মেটাতেই মনিপুরী সম্প্রদায়ের মধ্যে তাঁত শিল্প গড়ে উঠে। এর ফলে তাঁত শিল্পে নির্মিত সামগ্রী বাঙালি সমাজে নন্দিত ও ব্যবহৃত হয়। বিশেষ করে নকশি করা ১২ হাত মনিপুরী শাড়ি, নকশি ওড়না, মনোহারি ডিজাইনের শীতের চাদর বাঙালি মহিলাদের সৌখিন পরিধেয়।
রাজধানী শহরে কুমুদিনী, আড়ং, প্রবর্তনা প্রশিকা প্রভৃতি বিপণী কেন্দ্রে মনিপুরী তাঁত শিল্পে প্রস্তুতকৃত সামগ্রীর কদর দেখা যায়। আন্তর্জাতিক বাজারেও এর চাহিদা রয়েছে। সময়োপযোগী উন্নত প্রশিক্ষণ পেলে এই সম্প্রদায় দেশের তাঁত শিল্পের উন্নতিও বিকাশে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারবে। জানালেন স্থানীয় সাংবাদিক রফিক আহমদ। ছোটধামাইতে মনিপুরীদের বেশ কিছু নিজস্ব সংগঠন চোখে পড়ল। ছোট ধামাই শিল্পকলা একাডেমি, বাংলাদেশ পৌরে আপাকপ মৈতেই উল্লেখযোগ্য। মনিপুরীদের আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে এটি কাজ করে যাচ্ছে এবং মনিপুরী গরিব ও মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তি প্রদান করে থাকে।
মনিপুরী সংস্কৃতির আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো নাট্যচর্চা। রণজিৎ কুমার সিংহের রচনা ও নির্দেশনায় এখানে বেশ কিছু নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে। উল্লেখযোগ্য নাটকগুলো হচ্ছেÑ মৈতান, ওযাশক্কী কোলোয়দা, পুন্দিলম্বি অমদা, ভাগমহৈ রূপ ইত্যাদি।
ছোট ধামাই শিল্পকলা একাডেমির প্রশিক্ষক ভাগ্যসিংহ জানালেন, যথাযথ সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া গেলে অদূর ভবিষ্যতে মনিপুরী তাঁত শিল্পের ওপর তাদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হতো। মনিপুরীদের মাঝে কিছু কুসংস্কার আছে যেমনÑ বৃহস্পতি ও শনিবারে যাত্রা অশুভ। কোনো শুভকাজের সূচনাতে বিধবা রমণীদের মুখ দেখাও অশুভ। মনিপুরীদের আছে বার মাসে তের পার্বণ। চৈত্র সংক্রান্তিতে এখানে সবচে’ বড় উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। শাজিবু চাই রওবা। এই অনুষ্ঠানে থাকে বিভিন্ন ধরনের আনন্দ আর খাওয়ার আয়োজন। এরা মৃতদের জন্য ১৫ দিন তর্পণ বা প্রার্থনা করে। তখন ধর্মগ্রন্থ পাঠ করা হয়। মনিপুরীদের যেকোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সবচে’ বেশি বাজানো হয় মৃদঙ্গ।

No comments:

Post a Comment